Sunday, June 1, 2014

তুই কি আমার দুঃখ হবি – আনিসুল হক

তুই কি আমার দুঃখ হবি – আনিসুল হক

তুই কি আমার দুঃখ হবি?
এই আমি এক উড়নচন্ডী আউলা বাউলAnisul Haque
রুখো চুলে পথের ধুলো
চোখের নীচে কালো ছায়া।
সেইখানে তুই রাত বিরেতে স্পর্শ দিবি।
তুই কি আমার দুঃখ হবি?
তুই কি আমার শুষ্ক চোখে অশ্রু হবি?
মধ্যরাতে বেজে ওঠা টেলিফোনের ধ্বনি হবি?
তুই কি আমার খাঁ খাঁ দুপুর
নির্জনতা ভেঙে দিয়ে
ডাকপিয়নের নিষ্ঠ হাতে
ক্রমাগত নড়তে থাকা দরজাময় কড়া হবি?
একটি নীলাভ এনভেলাপে পুরে রাখা
কেমন যেন বিষাদ হবি।

তুই কি আমার শুন্য বুকে
দীর্ঘশ্বাসের বকুল হবি?
নরম হাতের ছোঁয়া হবি?
একটুখানি কষ্ট দিবি।
নিজের ঠোট কামড়ে ধরা রোদন হবি?
একটুখানি কষ্ট দিবি।
প্রতীক্ষার এই দীর্ঘ হলুদ বিকেল বেলায়
কথা দিয়েও না রাখা এক কথা হবি?
একটুখানি কষ্ট দিবি।
তুই কি একা আমার হবি?
তুই কি আমার একান্ত এক দুঃখ হবি?

লিচু চোর – কাজী নজরুল ইসলাম

     লিচু চোর – কাজী নজরুল ইসলাম



বাবুদের তাল-পুকুরে
হাবুদের ডাল-কুকুরে
সে কি বাস করলে তাড়া,
বলি থাম একটু দাড়া।
পুকুরের ঐ কাছে না
লিচুর এক গাছ আছে না
হোথা না আস্তে গিয়ে
য়্যাব্বড় কাস্তে নিয়ে
গাছে গো যেই চড়েছি
ছোট এক ডাল ধরেছি,
ও বাবা মড়াত করে
পড়েছি সরাত জোরে।
পড়বি পড় মালীর ঘাড়েই,

আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে – কাজী নজরুল ইসলাম

        আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে – কাজী নজরুল ইসলাম




আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে–

মোর মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর টগবগিয়ে খুন হাসে

আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে।


আজকে আমার রুদ্ধ প্রাণের পল্বলে -

বান ডেকে ঐ জাগল জোয়ার দুয়ার – ভাঙা কল্লোলে।

আসল হাসি, আসল কাঁদন

মুক্তি এলো, আসল বাঁধন,

মুখ ফুটে আজ বুক ফাটে মোর তিক্ত দুখের সুখ আসে।

ঐ রিক্ত বুকের দুখ আসে -

আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!


আসল উদাস, শ্বসল হুতাশ

সৃষ্টি-ছাড়া বুক-ফাটা শ্বাস,

ফুললো সাগর দুললো আকাশ ছুটলো বাতাস,

গগন ফেটে চক্র ছোটে, পিণাক-পাণির শূল আসে!

ঐ ধূমকেতু আর উল্কাতে

চায় সৃষ্টিটাকে উল্টাতে,


আজ তাই দেখি আর বক্ষে আমার লক্ষ বাগের ফুল হাসে

আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে!

আজ হাসল আগুন, শ্বসল ফাগুন,

মদন মারে খুন-মাখা তূণ

পলাশ অশোক শিমুল ঘায়েল

ফাগ লাগে ঐ দিক-বাসে

গো দিগ বালিকার পীতবাসে;


আজ রঙ্গন এলো রক্তপ্রাণের অঙ্গনে মোর চারপাশে

আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে!

আজ কপট কোপের তূণ ধরি,

ঐ আসল যত সুন্দরী,

কারুর পায়ে বুক ডলা খুন, কেউ বা আগুন,

কেউ মানিনী চোখের জলে বুক ভাসে!

তাদের প্রাণের ‘বুক-ফাটে-তাও-মুখ-ফোটে-না’ বাণীর বীণা মোর পাশে

ঐ তাদের কথা শোনাই তাদের

আমার চোখে জল আসে

আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে!


মানুষ – কাজী নজরুল ইসলাম

                  মানুষ – কাজী নজরুল ইসলাম

আমারে সকল ক্ষুদ্রতা হতে

বাঁচাও প্রভু উদার।

হে প্রভু! শেখাও – নীচতার চেয়ে

নীচ পাপ নাহি আর।


যদি শতেক জন্ম পাপে হই পাপী,

যুগ-যুগান্ত নরকেও যাপি,

জানি জানি প্রভু, তারও আছে ক্ষমা-

ক্ষমা নাহি নীচতার।।


ক্ষুদ্র করো না হে প্রভু আমার

হৃদয়ের পরিসর,

যেন সম ঠাঁই পায়

শত্রু-মিত্র-পর।


     নিন্দা না করি ঈর্ষায় কারো

অন্যের সুখে সুখ পাই আরো,

কাঁদি তারি তরে অশেষ দুঃখী

ক্ষুদ্র আত্মা তার।।

Tuesday, May 13, 2014

কাজলা দিদি -( যতীন্দ্রমোহন বাগচী)

কাজলা দিদি    
                    -( যতীন্দ্রমোহন বাগচী)

বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই, 
মাগো আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই? 
পুকুর ধারে লেবুর তলে থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে 
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না একলা জেগে রই- 
মাগো আমার কোলের কাছে কাজলা দিদি কই? 
সেদিন হতে কেন মা আর

স্পর্শমণি ( - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )

স্পর্শমণি

                - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

নদীতীরে বৃন্দাবনে সনাতন একমনে 
              জপিছেন নাম, 
হেনকালে দীনবেশে ব্রাহ্মণ চরণে এসে 
              করিল প্রণাম। 
শুধালেন সনাতন, "কোথা হতে আগমন, 
              কী নাম ঠাকুর?' 
বিপ্র কহে, "কিবা কব, পেয়েছি দর্শন তব 
              ভ্রমি বহুদূর। 
জীবন আমার নাম, মানকরে

১৪০০ সাল ( - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )


১৪০০ সাল

                            - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

   আজি হতে শতবর্ষ পরে 
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি 
      কৌতূহলভরে-- 
   আজি হতে শতবর্ষ পরে। 
আজি নববসন্তের প্রভাতের আনন্দের 
      লেশমাত্র ভাগ-- 
আজিকার কোনো ফুল, বিহঙ্গের কোনো গান, 
   আজিকার কোনো রক্তরাগ 
অনুরাগে সিক্ত করি পারিব কি পাঠাইতে 
      তোমাদের করে